কবিতাঃ ফুলকন্যার প্রেমে

দেখতাম মানুষের প্রেমের রঙিন আয়োজন,
নাটক-সিনেমা, কল্পলোকের কাহিনীতে মন হারাতো যে ক্ষণ।
রমণীর স্নেহের অভাববোধ করেছিলাম খুব,
যুবক হওয়ার পর থেকে বুক জুড়ে জমতো শুধু প্রেমেরই ক্ষুধ।

ভাবতাম, আমারও যদি হতো একটি প্রেমিকা।
আক্ষেপে বুক ফাটাতাম,
না জানি প্রেমিকার মুখে ভালোবাসি বলার স্বাদ কেমন হয়!
হয়তো শুনেছিলেন ওপরওয়ালা আমার অনুনয়,
তাই একদিন সাজালেন জীবনে প্রেমের জয়।

উচ্চমাধ্যমিক শেষে হাতে ছিলো অনেকটা সময়,
ঠিক তখনই হলো ফুলকন্যার সাথে পরিচয়।
প্রথমে শুধু কথা, তারপর জানা-শোনার পালা,
অবশেষে প্রেম ফুটলো, হলো হৃদয়ে প্রেমের মিলন-খেলা।
ফুলকন্যা মধুর স্বরে বলতো যখন, আপনাকে ভালোবাসি,
মনে হতো বহু জন্মের জমে থাকা তৃষ্ণা আজই মিটে গেলো এই বোধহয়,
হৃদয়ে ফুটতো ফুল আর হতাম আমিও সে কি যে খুশি!

কিন্তু অভাবী সংসারের বড় ছেলে আমি,
জীবিকার টানে ছেড়ে গেলাম আপন ভূমি।
বলেছিলাম, ফিরবো আমি আবার তোমার কাছে,
সেও বলেছিল, থাকবো অপেক্ষায়, জীবনভর যদি লাগে,
ভালোবাসি নি তো আর মিছে।

রাগ-জেদ মানুষের স্বভাব আর প্রেমের স্বভাব মান-অভিমান,
একদিন ফুলকন্যার সাথে কথা না হলে মাথায় যেন ভেঙে পড়তো আসমান।
অভিমানে, ভুল বুঝে আমাদের হতো কতো অনিষ্ট,
ফের একজনের ক্ষমাসুন্দর ডাকই সম্পর্ক জোড়া লাগাতে ছিলো যথেষ্ট।

অবশেষে এলো সে প্রহর,
যেদিন বিয়ের বন্ধনে হলাম আবদ্ধ।
অমূল্য রতন পেয়েছিলাম সেদিন হাতে,
আনন্দে যেন হয়ে গিয়েছিলাম স্তব্ধ।

কথা ছিলো, আজন্মকাল থাকবো একসাথে,
একসাথে হবো বৃদ্ধ, থাকবো হয়ে চির-আপন।
কথা রেখেছে ফুলকন্যা,
আমিও দেখতে দেখতে কাটিয়ে দিলাম ফুলকন্যার প্রেমে আস্ত একটা জীবন।

- ফুলকন্যার প্রেমে

إرسال تعليق

أحدث أقدم