লাশ আর ঘাতক

দগ্ধ হৃদয়ের আর্তনাদ


আর কতো দহন সহ্য করতে হবে প্রভু?
যদি আমার কপালে সুখ লিখে থাকো,
তবে প্রশান্তির জলে স্নান দিয়ে শীতল করো আমাকে।
আর যদি কপালে সুখ না লিখে থাকো,
তবে আমাকে একবারে পুড়িয়ে অস্তিত্বহীন করে দাও।



কতটুকু সঞ্চয়


কিছু হতেই যে ধৈর্য হারিয়ে ফেলো,
একটুতেই যে মৃত্যু কামনা করো।
কবর কি তোমার আত্মীয় হয় নাকি খোবায়েব?
কতটুকু সম্পদ সঞ্চয় করেছো সাথে নেবার জন্যে?
কবরের জন্যে তোমার রোজগার যথেষ্ট কি?
এতটুকুতে কবরকে ঘুষ দিয়ে মানাতে পারবে তো?



কারণ আমরা বোকা


তারা যত্ন দিয়ে হৃদয় বাঁধে,
কথার আঘাতে হৃদয় চুরমার করে দেয়।
তারা মায়া দিয়ে সম্পর্ক গড়ে,
অবহেলায় তা আবার ভেঙে ফেলে দেয়।
তারা আবার প্রেম দেখায়,
আমরা আবার নিজেকে বিলিয়ে দেই।
জানি আবার পুড়বো, তবুও কেন ফিরে যাই?
কারণ আমরা বোকা, খুব বিশ্বাস করেই বিষ খাই।



বাতাস


বিশ্বাস ভেঙে গেলে মানুষ বাতাস হয়ে যায়।
অবাধ বিশ্বাসে যে মানুষ ঠকে গেছে,
তাকে চোখের সামনে হয়তো আর দেখা যাবে না।
অথচ অন্যেরা জানবে সে আছে,
তার সত্য উপস্থিতিও অনুভব করবে তারা।



ভাগ্য আর সিদ্ধান্ত


আমি জানি ভাগ্য আমাদের হাতে নেই।
তবে খোদাতায়ালা আমাদের সিদ্ধান্ত নেবার শক্তি দিয়েছেন,
আমরা নিজেদের ভালোমন্দের সিদ্ধান্ত নিতে পারি।
এরপর ভাগ্য স্বীকৃতি না দিলেও হয়তো মেনে নেওয়া যায়।
কিন্তু তুমি তো মুখে আমার হবে বললেও তোমার আমার হবার কোন ইচ্ছেই ছিলো না।
এটাকেও তুমি ভাগ্য বলে চালিয়ে দিচ্ছো।
তুমি বলছো, ভাগ্যের দোষে তুমি আমার হতে পারো নি।



দূরত্বের টোপ


অভিমান ভালো। তবে জানে তো?
অভিমানের নামে অবজ্ঞা সম্পর্ক মেরে ফেলে।
অভিমান হলে ফিরে এসো এ বুকে,
গৃহ ছেড়ে দীর্ঘদিন দূরে থাকতে নেই।
নয়তো গৃহ চলে যায় আগাছার দখলে।
আর যদি তা হয় তোমার দূরত্বের টোপ,
তবে যাও চলে যাও।
উপেক্ষায় রাখবে বলো আর কতকাল?



পরীক্ষাকেন্দ্র


তোমাকে নিয়ে কোথায় যাবো খোবায়েব?
তুমি আমাকে এমন একটা স্থান দেখাও,
যেখানে কোনদিন দুঃখ পৌঁছায়নি।
পৃথিবীর বুকে এমন স্থান দেখাও তুমি আমাকে,
যেখানে মানুষ সর্ব সুখে বাস করে।
তুমি জানো, তুমি বুঝো,
ফের তুমি মানতে চাও না, বড্ড অবাধ্য তুমি।
তুমি মানতে চাও না, এই আস্ত পৃথিবীটা মস্ত পরীক্ষাকেন্দ্র।
পরীক্ষা দিতে এসে কক্ষে শান্তি খুঁজতে নেই,
খুঁজতে নেই আলো, বাতাস, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ব্যবস্থা।



ফিরে তাকালে না


কতো নিষেধাজ্ঞা, কতো অপমান আর কতো যন্ত্রণা।
কতো অবহেলার পরেও ভালোবেসেছিলাম।
কতো দিন প্রেম দহনে পুড়লাম,
ফের রাত-বিরেতে তোমাকে খুঁজলাম।
তুমি জানতে, তোমাকে নিয়েই আমার এসব দহন,
ফের তুমিই ছিলে আমার সুখ।
অথচ আমার ছটফট দেখেও তুমি ফিরে তাকালে না।



লাশ আর ঘাতক


বুক ছিঁড়ে হৃদয় নিয়ে পালিয়েছে এক মায়াবতী।
লাশের বুকে মস্ত ফুটো,
ফুটো বেয়ে গড়িয়ে পড়ছে গলিত ভালোবাসা।
ফের লাশ চায় ঘাতকের বুকে মাথা রাখতে।
লাশ জানে না, ঘাতকের বুকে ভালোবাসা নেই।
ঘাতকের কপালে চুমু দিতে চায় লাশ,
অথচ কপালে স্পষ্ট লিখা, বিশ্বাসঘাতক।



হারানো


আমি ভেবেছিলাম, তারা আমাকে মনে রাখবে।
তারা আমার শূন্যতা, অভাব অনুভব করবে।
কিন্তু যখন আমি সবার থেকে আড়াল হয়ে গেলাম,
আমি দেখলাম, তারা কেউই আমাকে হারায় নি।
কারো কাছেই মনে হয় নি, কেউ একজন আর নেই।
বরং আমিই হারিয়েছি এক পৃথিবী সমপরিমাণ মানুষ।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন