জিজ্ঞেস করে দেখো
তুমি অপেক্ষাকে জিজ্ঞেস করে দেখো,
আজও তোমাকে কতোটা ভালোবাসি।
তুমি জমিনকে জিজ্ঞেস করে দেখো,
পাখি তো উড়ে গেছে বহু আগেই,
তবে কোন আশাতে আজও আমি ঘরটা যত্নে রাখি।
তুমি আকাশকে জিজ্ঞেস করে দেখো একবার,
আমি কেন আকাশের দিকে তাকিয়ে হাসি।
চোখে বিষাদ প্রকাশ
তোমরা বলছো, যেহেতু আমি প্রকাশ করছি না,
বোধহয় আমার কোন বিষাদ নেই।
অথচ আমার চোখ অজস্র শব্দ ঝরাচ্ছে।
যা তোমরা পড়তে পারছো না।
তাই আমি বলবো,
তোমরা আমাকে বুঝতে চাও নি কখনো,
তাই আমার চোখে প্রকাশ করা বিষাদ দেখো না।
ওয়াদা-ভঙ্গকারী
আলোর গতির হিসেবে দুই চোয়ালের দূরত্ব যতোটুকু,
ততটুকু পরিমাপের সময়ের পূর্বেই তুমি বদলে গেলে।
মুখ ফিরিয়ে নিলে, চেনা থেকে অচেনা হয়ে গেলে।
তবে কোন মুখে বলেছিলে,
পুরো জীবন আমার হয়ে আমাকে ভালোবাসবে?
কিভাবে দাঁড়াবে সে মুখ নিয়ে আয়নার সামনে?
মৃত্যুর ফাঁদ
তীব্র স্বাদ ছিলো পৃথিবী দেখবো,
খোদা আমার ইচ্ছে পূরণ করলেন।
কিন্তু এসে দেখলাম বড় অদ্ভুত কিছু!
আমরা না যতোটা ইচ্ছে নিয়ে পৃথিবী দেখতে চাই,
পৃথিবীর আমাদের রেখে দেবার ততোটা ইচ্ছে নেই।
তাই বোধহয় প্রলয়, দুর্যোগ, অবিচার লালন করে সে,
পেতে রাখে যেখানে সেখানে অসংখ্য মৃত্যুর ফাঁদ।
প্রতিশ্রুতি
প্রতিশ্রুতির উপর ভরসা করেই মানুষ বাঁচে।
কিছু মানুষ বাঁচে আপন মানুষের প্রতিশ্রুতিতে,
আবার কিছু বাঁচে নিজেকে বদলে ফেলার প্রতিশ্রুতিতে।
বাঁচার জন্যে প্রতিশ্রুতি এতোটাই গুরুত্বপূর্ণ যে,
প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ হলে মানুষের বাঁচার ইচ্ছেটাও মরে যায়।
মিথ্যে আক্ষেপ
তারে হারাইয়া দীর্ঘকাল আক্ষেপ করিলাম,
দীর্ঘ রজনী অনিদ্রায় কাটাইলাম,
দীর্ঘদিন নিজেরে অভিশাপ দিলাম।
অথচ আমি মানতেই চাইলাম না,
যে পুরুষের ঘরের চাবি আজ তার আঁচলে বাঁধা,
সে তো জন্মের পূর্বেই খোদা প্রদত্ত সে পুরুষের কপালেই লিখা ছিলো।
তবে আমি কি হারাইয়া এতো আক্ষেপ করি?
সে তো কখনোই আমার ছিলো না।
নিজের জন্যে বাঁচো
হঠাৎ করে আজ আয়নাতে চোখ পড়েছিলো।
ওপাশ থেকে কে জানি বলতে লাগলো,
তোমার বলতে তোমার কেউ নেই আজ,
অবশেষে তুমিই তোমার আছো।
অনেক তো হয়েছে অন্যের প্রতি মোহাব্বত,
এবার একটু নিজের জন্যেও বাঁচো।
অযোগ্য
আমি যেমন তোমাকে পাবার অযোগ্য,
তেমন তুমিও সত্য প্রেম পাবার অযোগ্যই।
মূলত অযোগ্য আমরা দুজনই।
তোমার ভাগ্যে সত্য প্রেম সয় নি,
আর আমার ভাগ্যেও তোমাকে সয় নি।
তোমার অনুপস্থিতি
তোমাকে ছাড়া আমার কতোটা যে শূন্য লাগে,
তোমাকে তা বলবার কোন উপায়ন্তর নাই।
যেখানে আমার দুঃখগুলো তোমাকে বলবার কথা,
সেখানে দুঃখগুলোর জন্মস্থানই তোমার অনুপস্থিতি।
অবুঝ
একসঙ্গে থেকেও যে তোমাকে মায়া করে নি,
ভালোবাসা শিখিয়েও যে ভালোবাসে নি।
আর তুমি ভাবলে, তোমার দূরত্ব তাকে পোড়াবে?
হায় খোবায়েব, এতোটাও অবুঝ হইয়ো না।
তোমার বিদায়ের পূর্বেই দেখো তার নতুন প্রেম দরজায় দাঁড়িয়ে আছে।
পোড়ানো তো বাদ, তোমাকে মনেও পড়বে না তার।