খুঁজো না বৃথা

খুঁজো না বৃথা


শরতের পরে হেমন্ত অব্দি বুঝিয়েছি,
সামনে অসহনীয় শীত,
তোমার উষ্ণতার বড্ড প্রয়োজন আমার।
তীব্র অবহেলায় গুড়িয়ে দিলে আমার ইচ্ছেটা।
তোমার তো বসন্ত পছন্দ।
শীতের পরে বসন্ত আসলে আমাকে খুঁজো না আর বৃথা।



কি যেন নেই


চারদিকে তখন পূর্ণতার উৎসব বিরাজমান ছিলো।
আকাশে পূর্ণ বাঙলায় লিখা ছিলো,
তুমি শুধু আমার।
এমন পূর্ণতার মাঝেও আমার খানিকটা বুক ব্যথা হলো।
সবার উল্লাস দেখতে দেখতে আমার মনে হলো,
কি জানি নেই আমার! কে জানি হারিয়ে গেছে।



অসহায়


আমাকে আর কাঁদিও না নিয়তি,
আমি যে বড্ড অসহায়।
আমার যত্ন নেবার মতো কেউ নাই।
প্রভুর এই বিশাল সাম্রাজ্যে এমন কেউ নাই,
যে আমার পাশে বসবে, মাথায় হাত রাখবে।
নরম স্বরে বলবে, আমি আছি তোমার পাশে।
এটুকু স্বান্তনা দেবার মতো কাউকে আমি পাই নি।



যুদ্ধ আর প্রেম


আমি আমাকে শ্বাসরুদ্ধ করে জিজ্ঞেস করেছিলাম,
বলো, কি চাও তুমি?
ফের নিজেই উত্তরে তোমাকে চেয়েছিলাম।
এদিকে তুমি চেয়েছিলে যুদ্ধ।
তুমি বুঝে গিয়েছিলে,
তুমি কলকাঠি নাড়লেই আমার পরাজয় নিশ্চিত।
অথচ তুমি এটা বুঝলে না, যদিও আমি পরাজিত হই,
আমি তোমার বিজয়কেও আমার বিজয়ই ভাববো।
এতকিছু দেখলে, তুমি এরপরও বুঝলে না,
তোমার প্রতি আমার প্রেম কতোটা শুদ্ধ।



মায়া-মোহ ক্ষণিকের


এই মাটি, আসমান, এত সুন্দর সব সৃষ্টি শুধুই রুহের মোহ।
এই মোহ কেটে গেলে রুহও ছেড়ে যায় নিজ দেহ।
জন্মক্ষণ হতে সঙ্গ দেওয়া দেহটাকেও যদি ছেড়ে যাওয়া যায়,
তুমি তো ভিন্ন দেহের প্রাণ, ক্ষনিকের সঙ্গী।
মায়া-মোহ কেটে গেলে তুমিও তো ছেড়ে যাবেই,
তবে এ বিচ্ছেদে তোমার আর কি দায়?



বিপজ্জনক


ঝুঁকিমুক্ত জীবন চাইলে কখনো জন্মাতামই না!
যেহেতু জন্মেই গেছি, এরপর মৃত্যু বাধ্যতামূলক।
সময় আমাকে ক্রমশই মৃত্যুর দিকে নিয়ে যাবে,
তা আমি মৃত্যুর থেকে বাঁচার যত চেষ্টাই করি।
অতএব বিপজ্জনক বলতে কিছুই নেই,
যা আছে তা বাধ্যতামূলক।
কিংবা বিপজ্জনক বলতে যদি কিছু থাকে,
তবে জন্ম নেওয়াটাই জীবনের জন্য বিপজ্জনক।



তোমার হৃদয়ে আমি আছি


মেনে নিলাম, তুমি ভালোবাসো না।
তবে কি আমাকে ঘৃণা করো?
যদি ঘৃণাও করো, তবুও তোমার হৃদয়ে আমি আছি।
যদি আমাকে ভুলেই গিয়ে থাকো,
তবে আমাকে ঘৃণা করো কিভাবে?
কাউকে ঘৃণা করতেও তো তাকে মনে রাখতে হয়।



বোকা মানুষ


কিছু মানুষ মাত্রাতিরিক্ত বোকা।
যারা বারবার নিরাশ হয় ঠিকই,
ফের প্রয়োজন এবং অগ্রাধিকারের পার্থক্য বুঝে না।
অন্যেরা নিজেদের প্রয়োজনেও যদি তাদের ডাকে,
তারা ভাবে, অগ্রাধিকার দিয়েই ডেকেছে।
এই সুযোগে স্বার্থপরেরা তাদের ব্যবহার করে নেয়।



সত্য-মিথ্যা


মানুষ বলার সময় হয়তো বলে,
যা বলবে সত্যি করেই বলবে।
কিন্তু সত্যিটা শুনার পর তা আর সহ্য করতে পারে না,
সত্যিটা মানতে পারে না।
কারণ সত্য সবসময় সুখবরের বাহক হয় না,
অথচ মানুষ সর্বদা সুখবরই প্রত্যাশা করে।
তাই মানুষ সত্যের চেয়ে মিথ্যেকেই বেশি মান্য করে।



মানুষ রূপী কুকুর


যদি মানুষের মতো দেখতে কোন প্রাণী দেখো,
যে কুকুরের মতো আচরণ করছে অন্য মানুষের জন্য।
কষ্ট করে হলেও বুঝে নিও,
মানুষ রূপী কুকুরটা কারো মায়াতে আঁটকে গেছে।
তাই একটু যত্নের লোভে অবহেলা সয়ে নিচ্ছে,
যেমন কুকুর সব সয়ে নেয় এক টুকরো রুটির আশায়।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন